নারী মর্যাদা ও নিরাপত্তায় ইসলামের পূর্ণ নিশ্চয়তা — হাফেজ রাশেদুল ইসলাম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলায়েরচর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডে গতকাল (১৫ নভেম্বর) এক নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়ার্ড সভাপতি মাওলানা শাহাদাৎ হোসাইনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর সদর আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম। সমাবেশে হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, “নারীর মর্যাদা নিশ্চিত করতে পৃথিবীর বিভিন্ন মতবাদ নানা প্রস্তাব রেখেছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থাই নারীর প্রকৃত উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে পারেনি।
একমাত্র ইসলামই নারীর পরিপূর্ণ মর্যাদা, অধিকার ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে।” তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে যারা নারীর অধিকার নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তারা নিজেরাই এ বিষয়ে উদাসীন। তিনি দাবি করেন, “জামায়াতে ইসলামই দেশের একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন, যার অর্ধেক সদস্য নারী। অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে নারীর এমন অংশগ্রহণ নেই।” নারীর নিরাপত্তা প্রসঙ্গে রাশেদুল ইসলাম বলেন, “আল্লাহ নারীদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান, নিরাপত্তা ও মর্যাদা নির্ধারণ করেছেন।
কিন্তু কিছু রাজনৈতিক মহল নারীদের হেয় করার চেষ্টা করছে। জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীদের ঘরে আটকে রাখার কোনো নীতি নেই; বরং কর্মক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে রাতের আঁধারে একজন নারীও শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে—যেমনটি ছিল রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে।” শেরপুরে নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এ জেলায় নারী শিক্ষার জন্য আধুনিক কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল।
ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জেলা হাসপাতাল পর্যন্ত নারীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই।” তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমি এমপি নির্বাচিত হলে শেরপুরে সবার জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে, বিশেষ করে নারীর স্বাস্থ্যসেবায় বড় পরিবর্তন আনা হবে।
পাশাপাশি সকল নারীর জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।” উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি জানান, “শেরপুরে স্বতন্ত্র মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেখানে নারীদের জন্য ১০০% আবাসন সুবিধা থাকবে এবং সকল শ্রেণির মানুষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।” নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়নে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন,
“আমরা নারীদের এমন অবস্থান দিতে চাই, যেখানে তাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্ণ সক্ষমতা বজায় থাকবে।” সমাবেশের শেষাংশে তিনি ভোটারদের ন্যায়পরায়ণতা ও বিবেকের ভিত্তিতে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমার ভোট আমি দেবো—এ নীতিতে নয়; বরং যাঁরা ন্যায়, সত্যবাদিতা, তাকওয়া ও আমানতদারীতায় অটল, তাঁদেরকেই ভোট দিন।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচনে জনগণের সহযোগিতা পেলে শেরপুরে একটি আদর্শ, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলবেন।

