কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করা যায়। অনলাইনে আয় করার সহজ উপায়। অনলাইনে কিভাবে ইনকাম করা যায়। আপনি এই পোস্টটি পড়ে ঘরে বসে বসে অনলাইনে ইনকাম করত
আপনার পাশের বাসার বা আপনার কোনো বন্ধু অনলাইনে আয় করছে। আপনি এটা কিছুদিন আগে জানতে পেরেছেন। আপনার এখন অনলাইন আয় করতে মন চাইছে অথবা আপনার মনে অনেক প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। তাইতো আপনি এই পোস্টটি পড়তে এসছেন।
অনলাইনে ইনকাম করার ইচ্ছা আপনার থাকলে পোস্টটি মন দিয়ে সময় নিয়ে পড়ুন। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে অনলাইনে কিভাবে আয় করা যায় তা জানতে পারবেন। আমি এখানে অনলাইনে আয়ের ৬টি নিশ্চিত উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব।
০১. ব্লগিং
ব্লগিং হতে পারে আপনার স্বপ্নের পেশা। বর্তমানে কয়েক মিলিয়ন ওয়েবসাইট বা ব্লগসাইট রয়েছে। ব্লগিং করে খুব ভালো মানের আয়ের ব্যবস্থা আছে। আপনি যদি লেখালিখি পছন্দ করেন তবে ব্লগে লিখুন।
ব্লগিং করার সুবিধা হচ্ছে এখানে নিয়মিত কাজ করতে হয় না। তাছাড়া যেকোনো যায়গা থেকে যেকোনো সময় কাজ করতে পারবেন। শুধু কাজ করার জন্য আপনার দরকার পড়বে ইন্টারনেট সংযোগ ও একটা মোবাইল বা কম্পিউটার।
এখন আপনার মনে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যে, কত টাকা আয়ের সুবিধা এখানে থাকছে। এটা নির্ভর করবে আপনার ট্যালেন্টের এবং কতটা ক্রিয়েটিভ তার উপর। আপনার সাইটের ভিজিটর যত বেশি হবে আপনার আয় ততো বেশি হবে।
০২. আর্টিকেল রাইটার (লেখক)
বর্তমান সময়ে একজন কন্টেন্ট বাইটারের চাহিদা আকাশচুম্বি। একটা সাইট কতটা জনপ্রিয় হবে তা নির্ভর করে কন্টেন্ট এর উপর। কোনো ব্লগের কন্টন্ট কোয়ালিটি ভালো না হলে পাঠক পড়বে না। এতে ব্লগের ভিজিটর সংখ্যা ও আয় কমে যাবে।
তাছাড়া বর্তমানে কোনো পণ্য ক্রয় করার আগে মানুষ গুগলে সার্চ করে। এই বিষয় টার্গেট করে অনেক কোম্পানি তাদের প্রডাক্টের প্রচারের জন্য অনলাইনকে বেছে নেয়। কন্টেন্ট রাইটার হায়ার করে, তাদের পণ্য সম্পর্কে সোস্যাল মিডিয়া ও তাদের ওয়েবসােইটে লেখার জন্য।
আপনি যদি এসইও অপটিমাইজড (SEO Optimized) কন্টেন্ট লিখতে পারেন তবে এসব জায়গায় আপনার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। যাদের ইংরেজির উপর দক্ষতা আছে তারা খুবই সহজে কন্টেন্ট বা আর্টিকেল রাইটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
০৩. অনলাইন শিক্ষকতা
অনলাইন শিক্ষকতা খুবই ভালো একটি পেশা। যদি কোনো একাটা বিষয়ের উপর আপনি বিশেষভাবে দক্ষ হয়ে থাকেন তবে তার উপর কোর্স বনাতে পারেন। আপনি যদি ভালো প্রগ্রামিং, রান্না, মেকাপ ইত্যাদিতে দক্ষ হন তবে তার উপর ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
অনেক অনলাইন প্লাটফর্ম আছে যেখানে এই কোর্স ভিডিও গুলি বিক্রি করতে পারবেন। বেশিবভাগ অনলাইন টিউটোরিয়াল প্লাটফর্ম আপনাকে তাদের নির্দিষ্ট ফর্ম পুরণ করতে দিবে এবং কোর্সের ডেমো দিতে বলবে। আপনি সঠিকভাবে ফর্ম পুরণ করে সকল তথ্য দিবেন।
বিষেশজ্ঞদের দ্বারা আপনার কোর্সটি পরীক্ষা করানো হবে। যদি কোর্সের মান ঠিক থাকে তবে তাদের সাইটে পাবলিসের অনুমতি দিবে। আপনার সুন্দর একটি প্রফাইল তৈরি করতে হবে। এরপর থেকে আপনার আয় শুরু। যত কপি বিক্রি হবে তত টাকা আপনাকে দেয়া হবে। তবে প্রতি কপিতে কিছু টাকা সাইগুলি কেটে নেয় তাদের মার্কেটিং ও আনুসাঙ্গিক খরচের জন্য।
যদি আপনি টিউটোরিয়াল সাইট যেমন: Udemy তে কোর্সটি বিক্রি করতে না চান তবে নিজের একটি টিউটোরিয়াল সাইট বানাতে পারেন। তবে আপনাকে মার্কেটিং করতে হবে।
০৪. ইউটিউব ভিডিও বা চ্যানেল
ইউটিউব ভিডিও বানানোর মাধ্যমেও আপনি আয় করতে পারেন। আপনার কোর্সটা যদি সরাসরি টাকা নিয়ে বিক্রি করতে না চান বা আপনি সকলের মাধ্যে শিক্ষাটা ছড়িয়ে দিতে চান তবে ইউটিউব অনেক ভালো একটি প্লাটফর্ম।
আপনি যেকোনো বিষয়ের উপর ভিডিও বানাতে পারেন, যেমন: ফ্যাশান, সাস্থ্য, টেকটিপস ইত্যাদি। এগুলো ইউটিউবে ভিডিও আকারে ছাড়তে পারেন। যেখানে যে কেউ আপনার ভিডিও দেখে উপকৃত হবে এবং মনিটাইজেশনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আপনার আয় হবে। বিষয়টা এমন সাপ মরল লাঠিও ভাঙ্গল না।
বর্তমানে ইউটিউব থেকে ইউটিউবাররা মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। আপনিও তাদের একজন হতে পারেন যদি আপনার কন্টেন্ট মানুষ পছন্দর করে।
০৫. সিপিএ মার্কেটিং (CPA marketing)
সিপিএর পুরোটা হচ্ছে ‘কস্ট পার অ্যাকশন’। এখানে প্রতিটি নির্দিষ্ট অ্যাকশন বা কাজ সম্পন্ন করলে তার বিনিময়ে কমিশন পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট ফরম পূরণ, ই–মেইল সাইনআপ, অ্যাপ ইনস্টল করাসহ আরও অনেক কিছুই হতে পারে একেকটি সিপিএ মার্কেটিংয়ের কাজ। কাজের ধরনভেদে কমিশনের পরিমাণ কম–বেশি হয়।
সিপিএ মার্কেটিং এর বিভিন্ন ওয়েবসাইট আছে, সেখানে আপনাকে সাইন আপ করে লিংক নিতে হবে। তাদের সাইটে লেখা থাকে আপনি কোন কাজ বা একশানের জন্য কত টাকা পাবেন। সবকিছু দেখে শুনে সাইন আপ করুন।
০৬. ফেসবুক থেকে আয়
আপনি ঠিক পড়েছেন! ফেসবুক শুধু সময় কাটানোর জায়গা নয়। চাইলে আপনি এখান থেকে ভালো পরিমানে একটি আয় করতে পারেন। আপনাকে ফেসবুকে আয় করার জন্য একটা ফেসবুক পেজ খুলতে হবে। ভিডিও আপলোড করতে হবে।
ফেসবুকে কিন্তু লেখালিখির মাধ্যমে আয় করা যায় না। ফেসবুকে শুধুমাত্র ভিডিওতে মনিটাইজেশন দেয়া হয়। তাই ফেসবুক দিয়ে আয় করার জন্য আপনাকে ভিডিও বানাতে হবে।
পেজে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফলোয়ার হওয়ার পর মনিটাইজেশনের জন্য এপ্লিকেশন করতে হবে। ফেসবুক কতৃপক্ষ আপনার পেজকে রিভিউ করে দেখবে, যদি আপনার ভিডিও ও পেজটি ফেসবুকে নিয়মনীতির ভিতরে থাকে তবে আপনাকে মনিটাইজেশন দেয়া হবে। এরপরে শুধু টাকা আর টাকা।
শেষকথা:
আমরা বাস্তর জীবনে যেমনভাবে কাজ করে টাকা আয় করি, অনলাইনেও একইভাবে কাজ করতে হয়। পার্থক্য এখানে যে, বস্তবে কাজ করতে আমাদের কাজের জায়গায় উপস্থিত হয়ে কাজ করতে হয় আর অনলাইন বা ইন্টারনেটে আপনি যেকোনো জায়গা থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করতে পারেন।
বাস্তব কাজে যেমন কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে আমরা সফল হই অনলাইনেও একই। শর্টকাটে কখনও সফল হওয়া যায় না। আপনি অনলাইনে বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে পারেন কিন্তু তার জন্য আপনাকে কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে।
One Comment