দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। মোট শনাক্ত রোগী ১০ লাখ থেকে বেড়ে ১১ লাখ ছাড়াতে সময় লেগেছে মাত্র ৯ দিন। দেশে ১৬ মাসের বেশি সময় ধরে চলা মহামারিতে এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুত এক লাখ রোগী শনাক্তের রেকর্ড।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সর্বশেষ দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধের কোনো ইতিবাচক প্রভাব এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। বিধিনিষেধ শিথিলের পর পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আয়োজিত পশুর হাটগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করছেন। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। হাটে যাওয়া ব্যক্তিদের কারও কারও করোনা শনাক্ত হচ্ছে।
পশুর হাটের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা দিয়ে রাখা আর মাইকিংয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে স্বাস্থ্যবিধি। অন্যদিকে ঈদ সামনে রেখে গ্রামের পথে ছুটছে হাজার হাজার মানুষ। সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা মানা হচ্ছে না। ইতিমধ্যে গ্রামগঞ্জে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। বেশি ছড়াচ্ছে করোনার ডেলটা ধরন (ভারতে উৎপত্তি)।
সব মিলিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, শিগগিরই সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার আশা নেই। বরং ঈদের পর অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এখন যেভাবে লোকসমাগম হচ্ছে, সংক্রমণে তার প্রভাব দেখা যাবে ঈদের পরে। দুই সপ্তাহের বিধিনিষেধের প্রভাবে ঈদের আগে যদি সংক্রমণ না কমে, তাহলে ঈদের পর জ্যামিতিক হারে রোগী বাড়ার আশঙ্কা আছে।
ঈদুল আজহার সময় গত বছরও পশুর হাটের অভিন্ন চিত্র ছিল। কিন্তু গতবার ঈদের পর সংক্রমণ খুব একটা বাড়তে দেখা যায়নি। তাহলে এবার শঙ্কা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মুশতাক হোসেন বলেন, এবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। ইতিমধ্যে গ্রামগঞ্জে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ‘মিউটেশনের’ মাধ্যমে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা বেড়েছে। ভারতে দেখা গেছে, ডেলটা ধরন ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রামগঞ্জে শ্রমজীবী মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
রোগী বাড়ছে দ্রুত
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরিস্থিতি বিভিন্ন সময় ওঠা-নামা করেছে। তবে বাংলাদেশ সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে এখন। চলতি জুলাইয়ের প্রথম ১৮ দিনে প্রায় দুই লাখ রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছিল ৯ জুলাই। মোট রোগী ৯ লাখ থেকে ১০ লাখ ছাড়াতে সময় লেগেছিল ১০ দিন। আর এর পরের ৯ দিনে শনাক্ত হয়েছে মোট ১ লাখ ৩ হাজার ৪৪৬ নতুন রোগী।