নীলফামারীর সৈয়দপুরে ন্যায্য দামে ফুলকপি বিক্রি করতে না পেরে বাজারেই ফেলে যাচ্ছেন কৃষকরা। সৈয়দপুরের প্রায় প্রতিটি হাটেরই একই চিত্র। কৃষকরা বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে নিয়ে আসলে তেমন দাম পাচ্ছেন না। ফলে হাতাশায় বাধ্য হয়ে ফুলকপি বাজারেই ফেলে চলে যাচ্ছেন।
জানা যায়, চলতি বছর সৈয়দপুরে ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশি ফলন হওয়ায় চাষিরা খুশি হলেও বাজারে নিয়ে এসে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পাচ্ছেন না। ফলে হতাশ হয়ে বাজারেই ফুলকপি ফেলে চলে যাচ্ছেন। বাজারে দাম না থাকায় অনেক কৃষকের ফুলকপি জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
সৈয়দপুর বাইপাস পাইকারি ফুলকপি বিক্রি করতে আসা কৃষক মাহাবুল আলম বলেন, আমরা বাজারের একপাশে ফুলকপি স্তুপ করে রেখেছি। বাজারে যা দাম তাতে চাষের খরচ ওঠা তো অনেক দূরের কথা, নিয়ে আসার ভ্যানগাড়ির ভাড়াও পাচ্ছি না। এই সবজি চাষে আমাদের বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আমরা লোকসান গুনছি। এই সবজি চাষ করে নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
এই বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে আসা বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক লুৎফর রহমান বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম। এখন বাজারে প্রতিটি ফুলকপি ২-৩ টাকার বেশি দাম উঠছে না। অথচ এই ফুলকপি চাষে আমার প্রায় ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাই বাজারে ফুলকপি ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছি।
পোড়ারহাট থেকে আসা কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি দেড় বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছিলাম। এখন বাজারে প্রতিটি বাঁধাকপি ৪–৫ টাকা করে বিক্রি করেতে হচ্ছে। লোকসানে সব শেষ হয়ে গেল।
সবজি পাইকার শাহিদ হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি ও আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে মানুষ এখন ফুলকপি খেতে চাচ্ছে না। তাই স্থানীয় ও বাইরের পাইকাররাও ফুলকপি নিতে চাচ্ছেন না। ফলে দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা।
সৈয়দপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মমতা সাহা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ফুলকপি ও বাঁধাকপির ব্যাপক ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নেই বিভিন্ন ধরেনের সবজির চাষ হয়েছে। এখন চাহিদার তুলনায় বেশি সরবরাহ হওয়ায় বাজারে তেমন দাম পাচ্ছেন না।