Categories
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

বালুচরে মিষ্টি কুমড়া চাষে লাভবান কৃষকরা!

বালুচরে মিষ্টি কুমড়া চাষে লাভবান কৃষকরা!

লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ে বালুচরের চাষিরা মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। বালুচরের এই মিষ্টি কুমড়া যেন কৃষকের কাছে সোনার মতো। এই সোনা মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা।

জানা যায়, তিস্তা আর ধরলা নদীবেষ্টিত জেলা লালমনিরহাটে রয়েছে প্রায় অর্ধশত চর। বর্ষাকালে নদীতে পানি থাকলেও হেমন্তকালে পানি শুকিয়ে চর জেগে উঠে। এইসব এলাকার মানুষদের নদী ভাঙনের কবলে পড়তে হয়। এতে ফসল ও বসতভিটার ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষকরা জেগে উঠা বালুচরে ফসল বুনেন। ফসল ফলানো কষ্টসাধ্য হলেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালুচরে ফসলের চাষাবাদ করেন নদীপাড়ের মানুষ। সাধারনত কৃষকরা চরের জমিতে খিরা, তরমুজ, বাদাম চাষ করেন। তবে চরাঞ্চলের বালুতে মিষ্টি কুমড়ার চাষাবাদে খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় এই ফসলে বেশি আগ্রহ চাষিদের।

চাষিরা মতে, অন্যস্থান থেকে আনা পলিমাটি এনে বালুচরে গর্ত করে সেখানে পূরণ করা হয়। সাথে জৈব সারের মিশ্রন দেওয়া হয়। আর এতে ৩-৪টি করে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করতে হয়। এরপর চারা গাছ বড় হলে পানি সেচ আর একটু পরিচর্যা করলে ফুল ফল আসতে শুরু করে। চরে মিষ্টি কুমড়া চাষে মাচা দিতে হয় না। প্রতিটি গাছে প্রায় ৮-১০টি করে কুমড়া আসে। প্রতিটির ওজন ৩-৪ কেজি হয়। আর জমি থেকেই ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারা যায়।

আরো পড়ুন : লেবু চাষে ঝুঁকছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাষিরা!

তিস্তা চরাঞ্চলের চাষি মজিবর রহমান বলেন, চরে মিষ্টি কুমড়া চাষে কোন মাচা দিতে হয় না। এজন্য খরচ কম। উৎপাদনও ভালো হয়। কম খরচে অধিক লাভ করতে চরাঞ্চলের বালু জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বিকল্প নেই। যদি আগাম বন্যা না আসলে আশা করি ৪০-৫০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারবো।

সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের পাঙ্গাটারী গ্রামের কৃষক মছফুর আলী বলেন, আমার নিজের কোনো জমি নেই। সংসার চালাতে আমাকে চাষাবাদের বিকল্প কিছু নেই। তাই চরে ১ হাজার মিষ্টি কুমড়ার চারা রোপন করেছি। বর্তমানে ক্ষেতে ফল আসতে শুরু করেছে। চাষে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি ৪০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারবো।

একই এলাকার কৃষক আবু মিয়া বলেন, নদীতে ভাঙনে আমার সব জমি চলে গেছে। চরের বালু জমিতে গর্ত খুড়ে ৫০০ মিষ্টি কুমড়ার চারা লাগিয়েছি। দূর থেকে পাইপে টেনে পানি সেচ দিতে হয়। আমার প্রতিটি গাছে ৭-৮টি করে কুমড়া এসেছে। আশা করছি কুমড়া বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো।