পটুয়াখালীতে আগাম তরমুজের বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা। ইতোমধ্যে চাষিরা খেত থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেছেন। ফলে ভালো ফলনের পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তারা লাভবানও হচ্ছেন।
জানা যায়, সাধারণত ডিসেম্বরে আমন ধান তোলার পর জানুয়ারি থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী জাহাজমারা, মৌডুবি ও কলাগাছিয়া এলাকার বালুচর আগে পতিত থাকত। গত ৩ বছর ধরে এখানে আগাম তরমুজের চাষ শুরু হয়। চাষিরা জমিতে সেচ দেওয়া নিয়ে পানি সংকটে পড়েন। এতে তারা সরকারের সহযোগিতা চাচ্ছেন। চাষিরা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে তরমুজ বিক্রি শুরু করেন।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় ২২ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছিল। এ বছর আবাদ হয়েছে ২৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে।
তরমুজ চাষি জুলহাস (৪৫) বলেন, ‘চরের জমি অনাবাদী থাকত। গত ৩ বছর ধরে আমরা শীতকালে আগাম তরমুজের আবাদ করছি। আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। চাষে খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। খেতের পাশে মাটি খনন করে বড় কুয়া তৈরি করে জমিতে মিঠা পানি তুলে সেচ দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তরমুজ চাষে প্রচুর পানির প্রয়োজন। সাগরপাড়ে নোনা পানি। এ কারণে মিঠাপানির জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়।
আরেকজন তরমুজ চাষি ফারুক হাওলাদার বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে তরমুজের আবাদ করেছি। চাষে আমার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। প্রতিটির তরমুজ ২৮০-৩০০ টাকা দরে জমি থেকে ৩০০টি তরমুজ বিক্রি করেছি। এখনো খেতে ৩-৪ লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে।
আরেক তরমুজ চাষি আব্দুস সাকুর বলেন, আমি এ বছর ৩ বিঘা জমিতে তরমুজ আবাদ করেছেন এবং প্রায় ৪ লাখ টাকার বিক্রির আশা করছি।
তিনি আরো বলেন, এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ট্রাকে করে তরমুজ নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে আগের তুলনায় আমরা দাম ভালো পাচ্ছি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর তরমুজের আবাদ ও ফলন দুটোই ভালো হয়েছে। কৃষকরা ভালো দামে আগাম তরমুজ বিক্রিও শুরু করেছেন। পদ্মা সেতুর কারণে এখানকার তরমুজ সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে।