জনপ্রিয় ব্যাটল রয়্যাল গেম ‘লীগ অফ লেজেন্ডস’ (League of Legends) সাইবার-আক্রমণের শিকার হয়েছে বলে গেমটির ডেভেলপার কোম্পানি রায়ট গেমস (Riot Games) স্বয়ং সম্প্রতি মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে জানিয়েছিলেন। তাদের টুইট অনুসারে, হ্যাকাররা লীগ অফ লেজেন্ডস ‘ গেমে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাটাক’ চালিয়ে গেমের সোর্স কোড চুরি করে নিয়েছে। যার ফলে এই অ্যাকশন নির্ভর গেমের কনটেন্ট রিলিজ করার ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। আর আজ ব্লিপিং-কম্পিউটার (BleepingComputer) প্রদত্ত একটি লেটেস্ট রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, হ্যাকাররা একটি জনপ্রিয় হ্যাকিং প্ল্যাটফর্মে লীগ অফ লেজেন্ডস গেমের সোর্স কোড ১ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মূল্যের নিরিখে প্রায় ৮ কোটি টাকায় বিক্রি করছে।
League of Legends গেমের সোর্স কোডের বিনিময়ে Riot Games -এর কাছে টাকা চেয়ে ইমেল পাঠালো হ্যাকাররা
রায়ট গেমস হালফিলে বেশ কয়েকটি টুইটের মাধ্যমে ইউজারদের জানিয়েছে হ্যাকাররা লীগ অফ লেজেন্ডস এর সোর্স কোড হাতিয়ে নিয়েছে। তারা লিখেছে – “দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে – লীগ, টিএফটি, এবং একটি লেগেসি অ্যান্টিচিট প্ল্যাটফর্মের সোর্স কোড আক্রমণকারীরা চুরি করেছে।”
আর এই সোর্স কোড ১ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মূল্যের নিরিখে প্রায় ৮ কোটি টাকায় বিক্রি করতে চাইছে হ্যাকাররা। পাশাপাশি জানা গেছে, ইতিমধ্যেই গেম ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে একটি ইমেল পাঠিয়েছে আক্রমণকারীরা। যেখানে সোর্স কোড ফেরত পাওয়ার বিনিময়ে টাকা দেওয়ার দাবি করা হয়েছে। যদিও রায়ট গেমস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে – “আজ আমরা একটি র্যানসম ইমেল পেয়েছি। বলাই বাহুল্য, আমরা হ্যাকারদের অর্থপ্রদান করব না।” পাশাপাশি কোম্পানিটি তাদের ইউজারদের আশ্বাস দিয়েছে যে, ” যদিও এই সাইবার আক্রমণ গেমের বিল্ড এনভায়রনমেন্টকে বিপর্যস্ত করেছে এবং ভবিষ্যতে হয়তো আরো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে কোনও গেমারের ডেটা বা ব্যক্তিগত তথ্য যাতে হ্যাকারদের হাতে না পৌঁছতে পারে তা তারা নিশ্চিত করবে।”
আবার আরেকটি টুইটে রায়ট গেমস লিখেছে যে, প্রাপ্ত সোর্স কোডের মধ্যে কিছু পরীক্ষাধীন ফিচার রয়েছে যা হয়তো কখনোই পাবলিক করা যাবে না। আর গেমের সোর্স কোড বের করে নেওয়াতে কনটেন্ট রিলিজের কাজে ব্যাঘাত ঘটবে, কিছু গেমিং মোড এবং অন্যান্য ফিচারগত পরিবর্তন তুলনায় দেরিতে হয়তো গেমারদের জন্য রিলিজ করা হবে। তবে যেহেতু “এই কনটেন্টগুলির বেশিরভাগই প্রোটোটাইপ অবস্থায় রয়েছে, সেহেতু এগুলিকে আদৌ রিলিজ করা সম্ভব হবে কিনা তার কোনও গ্যারান্টি নেই। বলে কোম্পানির তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে।
যাইহোক, রায়ট গেমসের সিকিউরিটি টিম বর্তমানে সাম্প্রতিক এই সাইবার অ্যাটাক মূল্যায়ন করছে এবং তাদের সিস্টেম নিরীক্ষণ করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া, কোম্পানিটি তাদের ল-এনফোর্সমেন্ট বিভাগকেও অবহিত করেছে এই বিষয়ে। যাতে পুরো ঘটনা তদন্ত করে, এই সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হামলার নেপথ্যে কোন হ্যাকার গোষ্ঠীর হাত আছে তা খুঁজে বের করা যায়।