দিনাজপুরে চাষিদের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে। দেশে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ কম উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি সঠিক সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনার অভাবেও নষ্ট হয় অনেক পেঁয়াজ। তাই বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। আমদানি নির্ভরতা কমাতে ব্যাপকভাবে পেঁয়াজের চাষ করছেন দিনাজপুরের চাষিরা। তেমনি পেঁয়াজ চাষে সফল হয়েছেন দিনাজপুরের কৃষক গণেশ চন্দ্র রায়।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, সব মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধিতে তারা কাজ করছেন। তাই তাদের সার্বিক সহযোগিতায় উৎপাদিত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আকার, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিমান অনেক উন্নত। এই উপজেলার ২৩০ জন কৃষককে ১ কেজি করে এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ, ডেপ, পটাশ সারসহ পলিথিন ও অন্যান্য উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে বলে তারা জানায়।
জানা যায়, চিরিরবন্দরের নশরতপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নশরতপুর গ্রামের জগদিশ মেম্বারপাড়ার কৃষক গণেশ চন্দ্র রায় গ্রীষ্মকালীন এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করে সফল হয়েছেন। তিনি কৃষি বিভাগের থেকে পাওয়া এই জাতের পেঁয়াজ করে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই এই জাতের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
কৃষক গণেশ চন্দ্র রায় বলেন, এবছর আমি আমার ১০ শতক জমিতে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির নতুন উদ্ভাবিত এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষ করে সফলতা পেয়েছি। জমিতে উৎপাদিত প্রতিটি পিঁয়াজের ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম। পেঁয়াজের পাতা বিক্রি করে বাড়তি আয় করতে পারছি। আশা করছি পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভবান হতে পারবো।
নশরতপুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. খাদেমুল ইসলাম বলেন, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বাজারে যখন শীতকালীন পিঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে, সে সময় এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ মানুষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি আরো বলেন, এই জাতের পেঁয়াজ জুলাই-আগস্ট মাসে বীজবপণ করে ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যেই এ পেঁয়াজ সংগ্রহ করে বাজারজাত করা সম্ভব। ইতিমধ্যে বাজারে পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। গাছসহ পেঁয়াজ বিক্রি করে আর্থিকভাবে চাষিরা লাভবান হবেন।
চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা শারমিন বলেন, শীতকালে যখন পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে তখন এই পেঁয়াজ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি আমদানি নির্ভরতা কমবে।