Categories
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

চাকরি ছেড়ে বহুমুখী কৃষি খামার করে সফল কৃষিবিদ আকতার হোসেন!


চাকরি ছেড়ে বহুমুখী কৃষি খামার করে সফল কৃষিবিদ আকতার হোসেন!

নীলফামারীতে বহুমুখী খামার গড়ে সফল হয়েছেন কৃষিবিদ আকতার হোসেন। চাকরি ছেড়ে তিনি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনসহ বহুমুখী খামার গড়ে তুলেছেন। তিনি তার খামারে জাতের ধান, ধানবীজ, মাছ, ফল, মুরগি, জৈব সার ইত্যাদি উৎপাদন করছেন। তার এমন বহুমুখী খামার কৃষি ক্ষেত্রে সম্ভাবনার সৃষ্টি করছে। তার সফলতা দেখে অনেকেই কৃষি কাজে উৎসাহিত হচ্ছেন।

জানা যায়, কৃষিবিদ আকতার হোসেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের মাঝাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১২ বছর আগে এই লোভনীয় বেতনের চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে ৩৫ বিঘা জমির উপর বহুমুখী খামার গড়ে তোলেন। তিনি তার খামারে বিভিন্ন প্রকারের ধানের জাত, ধানবীজ, মাছ, ফল, মুরগি, জৈব সার ইত্যাদি উৎপাদন করছেন। তিনি তার খামারে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ও অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেন।

সরেজমিনে তার খামারে গিয়ে দেখা যায়, তিনি গ্রিন গ্লোবাল এগ্রো নামে বিশাল জায়গা জুড়ে খামার গড়ে তুলেছেন। তিনি তার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৩৫ বিঘা জমিতে খামার করেন। তার খামারের ৯ বিঘা জমিতে ৫টি বড় বড় পুকুর রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন। জমির মাঝখানে একটি রাইস মিল রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন জাতের ধান ভাঙান। তার মিলের পাশে একটি মুরগির খামার রয়েছে। আর তার পাশেই তৈরী হচ্ছে জৈব সার। আশে পাশের অনেকেই এসে তার কাছ থেকে কৃষি কাজের পরামর্শ নিচ্ছেন।

খামারের মালিক কৃষিবিদ আকতার হোসেন বলেন, আমি ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। কিন্তু মনে পড়ে ছিল গ্রামে। তাই ২০১০ সালে চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে আসি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য। বাবার সাথে পরামর্শ করে ৩৫ বিঘা জমিতে খামার গড়ে তুলি। যেখানে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করছি।

তিনি আরো বলেন, কৃষি কাজে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার মানবদেহের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। তাই কীটনাশক ও রাসায়নিক সার বিহীন জৈব পদ্ধতিতে খাদ্য উৎপাদন করছি। যা মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। আমার পুকুরে কোনো প্রকার কেমিক্যাল ফিড ব্যবহার করি না। ফিডের পরিবর্তে চালের কুড়া (রাইস ব্রান), গুড় ও খৈল ব্যবহার করি। এতে মাছ বেড়ে উঠতে সময় লাগলেও মাছের পুষ্টিগুণে ঘাটতি থাকে না।

আকতার আরো বলেন, আমার জমিতে উৎপাদিত ধান সনাতন চাল কলে মাড়াই করা হয়ে থাকে। আর এইসব চাল আমার নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। আমার উৎপাদিত চিনিগুড়া চালের বেশ চাহিদা রয়েছে। এখন উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম একটু বেশিতেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লোকজন খামার প্রতিদিন পরিদর্শনে আসেন। আর আশেপাশের অনেকেই নিজ উদ্যোগে খামার দেখতে আসেন এবং খামার করার পরামর্শ নেন।

সৈয়দপুরের বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. কামরুল হাসান সোহেল বলেন, আমি আকতার হোসেনের খামারটি পরিদর্শন করেছি। তার খামারটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। উদ্যোক্তা আকতার হোসেন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করছেন। আকতারের মতো শিক্ষিত তরুণরা যদি এভাবে নিরাপদ খাদ্য যোগান দেন, তাহলে সুস্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হবে না।

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) শাহিনা বেগম বলেন, আমি আকতার হোসেনের খামারটি পরিদর্শন করেছি। তিনি চাকরি ছেড়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তার এই খামারের কল্যানে মানুষ নিরাপদ খাদ্য আহরন করে সুস্থ্য সবল থাকবে।



Source link