মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে লাভবান মেহেরপুরের কৃষকরা। এই পদ্ধতি একটি আধুনিক কৃষির মাধ্যম। কৃষকরা বাজারে আগাম সবজি উঠানোর জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করে টমেটো সহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করে থাকেন। আর বর্তমান বাজারে এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত সবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং বাজার মূল্য বেশি থাকে বলে কৃষকরা মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মেহেরপুর কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছর এই জেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা মালচিং পদ্ধতিতে বিউটি প্লাস, লাভলী, অভিলাস, লভেলট্রি, বাহুবলি ও জিরো ফোর জাতের টমেটো আবাদ করেছেন।
মালচিং পদ্ধতি মূলত চীন ও জাপানের বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি মাধ্যম। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেওয়া হয় বলে সেটাকে মালচ বলা হয়। আর এ পদ্ধতিটিকে বলা হয় মালচিং। বাণিজ্য ও আধুনিকীকরণ চাষ পদ্ধতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক মালচিং-এর ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে। যা মাটি বাহিত বালাই প্রতিরোধী করে ও সেচে সাশ্রয়ী। এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ খরচ কম হয় এবং সবজির মাটি বাহিত কোনো রোগবালাই হয় না।
গাড়াডোব গ্রামের টমেটো চাষি আমজাদ হোসেন বলেন, এলাকার একটি কল্যান সমিতি থেকে বিনামূল্যে মালচিং পেপার ও কিছু নগদ অর্থ সহায়তা করে। তারপর কৃষি বিভাগের পরামর্শে ১ বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ শুরু করি। এই পদ্ধতিতে চাষে গাছ বড় ও সবল রয়েছে। কোনো মাটি বাহিত রোগ হয়নি।
তিনি আরো বলেন, টমেটো চাষে আমার ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছি। জমিতে অনেক টমেটো রয়েছে। আশা করছি ১ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারবো।
কৃষক জাকিরুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছর দেশি পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতাম। এবছর মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করে গত বছরের তুলনায় বেশি ফলন পেয়েছি। আগে জমিতে ৪-৫ বার সেচ দিতে হতো। এখন ২ বার দিলেই হয়। প্লাস্টিকের কারনে গাছের গোড়ায় আগাছাও কম থাকে। আর বাজারে এই পদ্ধতিতে চাষকৃত টমেটোর চাহিদাও বেশি।
মেহেরপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, মেহেরপুরের কৃষকদের কাছে দিন দিন মালচিং পদ্ধতিতে চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই পদ্ধতিতে চাষে গাছে রোগবালাই কম হয়, কীটনাশকের ব্যবহার কম হয়, সেচ কম দিতে হয়, আর উৎপাদিত ফসল দেখতে খুবই সুন্দর হয়। আর এই পদ্ধতিতে চাষকৃত সবজির বাজার দর ভালো থাকে বলে কৃষকরা উৎপাদন করে লাভবান হতে পারেন।