সম্প্রতি ‘মেট্রোরেলের পিলার ধসে প্রাণ গেল মা-ছেলের!’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
ফ্যাক্টচেক
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মেট্রোরেলের পিলার ধসে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ঘটনাটি ভারতের ব্যাঙ্গালোরের।
ফেসবুকে প্রকাশিত পোস্টগুলোর সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে, দেশীয় সংবাদমাধ্যম DBC News এর ফেসবুক পেইজে ‘মেট্রোরেলের পিলার ধসে প্রাণ গেল মা-ছেলের’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত কিছু পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, পোস্টগুলোতে ঘটনাটির স্থান উল্লেখ করা না হলেও প্রতিবেদনের বিস্তারিত অংশে এটি ভারতের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে৷ DBC News এর ফেসবুক পোস্টগুলো দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
তবে পরবর্তীতে গণমাধ্যমটি আগের ফেসবুক পোস্টগুলো প্রথমে সংশোধন করে।
কিন্তু পরে ফেসবুক থেকে সবগুলো পোস্ট মুছে এটি ভারতের ঘটনা উল্লেখ করে নতুন করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়।
তবে বাংলাদেশের অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন। ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও ভারত শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের মেট্রোরেল ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
যেমন, হাবিব আর রহমান সোহেল (আর্কাইভ) নামে একজন লিখেছেন, ‘মেট্রোরেলের পিলার ধসে প্রাণ গেল মা-ছেলের। এ যেন এক উন্নয়নের মহা সড়কে আরো এক উন্নয়ন।’
বাশের কেল্লা সাতকানিয়া (আর্কাইভ) নামে একজন লিখেছেন, মেট্রোরেলের পিলার ধসে প্রাণ গেল মা-ছেলের। আহারে সাধের মেট্রোরেল।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, শেরপুর জেলার (আর্কাইভ) পেইজেও কেবল আলোচিত ঘটনার শিরোনামটি উল্লেখ করে বলা হয়, ‘মেট্রোরেলের পিলার ধসে প্রাণ গেল মা-ছেলের!’
এসব পোস্টের কোথাও এটি কোথাকার ঘটনা তাউল্লেখ না করায় পোস্টগুলোর কমেন্টবক্স বিশ্লেষণ করেও ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা যায়।
পরবর্তীতে, আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম ‘NDTV, Times Now News, Opindia তে প্রকাশিত এ সম্পর্কিত মূল প্রতিবেদনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
মূলত, গতকাল মঙ্গলবার ভারতের ব্যাঙ্গালোরের নাগাভারা এলাকার নিকটে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের পিলার ধসে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হয়। পরবর্তীতে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও সংবাদটি প্রকাশ করা হলে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টি যথাযথ যাচাই না করে শুধুমাত্র শিরোনামটি কপি-পেস্ট করে ফেসবুকে প্রচার করছেন। ফলে ঘটনাটি ভারতের হলেও ভারত শব্দটি উল্লেখ না করে বাংলাদেশে প্রচার করায় ঘটনাটি বাংলাদেশের মেট্রোরেলের ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের মেট্রোরেলে এক তরুণীর নাচের ভিডিও নিয়েও অনুরূপভাবে সংবাদ প্রচার করায় সেটি বাংলাদেশের ঘটনা ভেবে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে এ নিয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সুতরাং, ভারতের ব্যাঙ্গালোরে মেট্রোরেলের পিলার ধসে মা-ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় বাংলাদেশে ‘ভারত’ শব্দ উল্লেখ না করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর।