Categories
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

চারা উৎপাদনে সফল তিন বন্ধু!


চারা উৎপাদনে সফল তিন বন্ধু!

লেবুগাছ থেকে কলমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে সফল তিন বন্ধু। লেখাপড়ার খরচ জোগাড় হবে এই আশায় অনলাইনে চারা উৎপাদন শিখেন তারা। পাশাপাশি অন্যদের বাগানে কাজ করে উপার্জন করতে দেখে তাদেরও আয় করতে ইচ্ছা হয়।

জানা যায়, তিন কিশোর মোমিন আলী, আশিক ইসলাম ও রিপন ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা মুন্সিপাড়া গ্রামের বসিন্দা। এই গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে লেবুর চাষ করেন মোবাশ্বের ইমরান। তিনি নিজে লেবু চাষের পাশাপাশি অন্যদেরও লেবু চাষে উৎসাহ দেন। মোবাশ্বের ইমরান সহ অন্যান্য বাগানিরা চাষের পাশাপাশি কলম করে চারাও উৎপাদন করেন। চারা উৎপাদনে তারা বহিরাগত শ্রমিক দিয়ে কাজ করান। বহিরাগতরা কাজ করে ভালো আয় করছে দেখে পড়াশোনার জন্য টাকা আয়ের জন্য তিন কিশোর অনলাইনের মাধ্যমে চারা উৎপাদন পদ্ধতি শিখে। তারপর তারও চারা উৎপাদন শুরু করে।

তিন কিশোর হলো স্কুলছাত্র আশিক ইসলাম ও মোমিন আলী এবং এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তিচ্ছু রিপন ইসলাম। বর্তমানে আকচা মুন্সিপাড়ায় কারও চারা উৎপাদনের দরকার হলে সবার আগে এই তিন কিশোরের ডাক পড়ে।

কিশোর মোমিন আলী বলেন, অভাবে লেখাপড়া যেন বন্ধ না হয়, সে জন্য নিজেকে দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি আয়ের উৎস হিসেবে বাগানে কাজ শুরু।

মোমিন আরো বলেন, আমাদের গ্রামে গড়ে উঠা লেবু বাগানে বহিরাগতরা কাজ করে ভালো আয় করছে। অভাবের কারণে আমাদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই আমরাও অনলাইনের মাধ্যমে চারা উৎপাদন শিখে নেই। বর্তমানে আমরা দিনে চার ঘন্টা কাজ করে জনপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা আয় করতে পারি।

আরেক বন্ধু আশিক আলী বলে, গ্রামে অনেক ফসল ও ফলের আবাদ হলেও আমরা প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। কারণ আমাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ নেই। ভবিষ্যতে যেন কৃষিকাজে উদ্যোক্তা হতে পারি, সে জন্য নিজেদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা অনলাইনের সাহায্য নিই। অযথা সময় নষ্ট না করে সময়কে কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। এতে আমাদের কিছু আয় এবং অনেক অভিজ্ঞতাও হয়।

রিপন ইসলাম বলেন, বহিরাগতদের আমাদের গ্রামে এসে উপার্জন করাটা আমাদের ব্যাপক উৎসাহিত করে। আমাদের পরিবার লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খায়। তাই আমরা অনলাইনের মাধ্যমে আধুনিক কৃষিকাজের সব ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। গ্রামে উদ্যোক্তাদের কাজ করে দেওয়ার পাশাপাশি আমরাও উদ্যোক্তা হতে চাই। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

আকচা মুন্সিপাড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মোবাশ্বের ইমরান বলেন, গ্রামে আমিই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষ করছি। লেবু বাগানের পাশাপাশি চারা উৎপাদন করে ভালো আয় করতে পারছি। বছর শেষে ৪০-৫০ হাজার টাকার চারা বিক্রি করতে পারি।

তিনি আরও জানান, আধুনিক কৃষির প্রশিক্ষণ ও সরকারি সহায়তা পেলে গ্রামের তরুণরা কৃষিকাজে আরও ভালো করবে; তৈরি হবে অনেক উদ্যোক্তা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল আজিজ বলেন, আমাদের দেশে দিন দিন লেবু জাতিয় ফলের ব্যাপক চাষ হচ্ছে। চাষিরা ফল চাষ করে সফলও হচ্ছেন। আমরা তাদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা করবো।



Source link