Categories
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসা গোটাচ্ছেন সিরাজগঞ্জের খামারিরা!


পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম বৃদ্ধিতে ব্যবসা গোটাচ্ছেন সিরাজগঞ্জের খামারিরা!

সিরাজগঞ্জের পোলট্রি শিল্পে ধস নেমেছে। বাজারের অস্থিতিশীল ব্যবস্থাপনা, পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম বৃদ্ধিতে অচল হয়ে পড়েছে পোল্ট্রি শিল্প। ইতোমধ্যে অধিকাংশ পোল্ট্রি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে পড়েছে খামার শিল্পে জড়িত শত শত খামার মালিক ও শ্রমিক।

জানা যায়, গত কয়েক বছর আগেও পোলট্রি শিল্প একটি লাভজনক শিল্প ছিল। শিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা উৎসাহী হয়ে অল্প পুঁজিতে লাববান হওয়ার আশায় খামার শিল্পে জড়ায়। এতে কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়। সিরাজগঞ্জ জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পোল্ট্রি খামার গড়ে উঠে। বর্তমানে দফায় দফায় পোলট্রি খাদ্য, মুরগির বাচ্চা ও ওষুধের দাম বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ে খামারিরা। অধিকাংশ খামারিরা লোকসান দিয়ে তাদের পুঁজি হারিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে খামারিরা খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকার আরও আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসবেন এমনটি আশা করছেন এ শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

খামারি হেলাল বলেন, আগের তুলনায় বর্তমানে পোল্ট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তবে খাদ্য ও ঔষধের দাম বাড়লেও বাড়েনি ডিম ও মুরগির দাম। ডিম ও মুরগির দাম হঠাৎ কয়েকদিন বাড়লেও কমে যায়। কিন্তু পোলট্রি খাদ্য আর ওষুধের দাম বাড়লে আর কমে না। এখন মুরগির ‘ফাউল টাইফয়েড’ হয়েছে যার চিকিৎসা ব্যয়বহুল। মুরগির এ নতুন রোগ নিয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্তৃপক্ষকে বারবার বলার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে প্রতি বস্তা মুরগির খাদ্যের দাম বেড়েছে মানভেদে ১০০০-১২০০ টাকা। বর্তমানে ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা ব্রয়লার মুরগির খাবার ৩০০০-৩২০০, সোনালি মুরগির খাবার ২৬০০-২৮০০ ও লেয়ার মুরগির খাবার ২৫০০-২৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাদ্যে দাম বাড়লেও উৎপাদিত ডিম বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকায়। আর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা কেজি ও সোনালি মুরগি ২৪০-২৬০ টাকায়।

বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলায় ২ হাজার ৬৫৭টি নিবন্ধিত খামারে রয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২৫৯ মুরগি। অনিবন্ধিত খামার ও খামারে থাকা মুরগির সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ।

পোলট্রি খামারের শ্রমিক আরিফ বলেন, আগে বেকার ছিলাম। খামার প্রতিষ্ঠার পর সেখানে কাজ করে সংসার চালাতাম। এখন সব কিছুর দাম বেড়েছে। মালিকরা খামার টিকিয়ে রাখতে পারছে না। এভাবে আর কিছুদিন চললে খামার বন্ধ হয়ে যাবে। আমি ও আবার বেকার হয়ে যাবো। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার বলেন, আমরা মাঝে মাঝে খামারিদেরকে সুলভমূল্যে টিকা দিয়ে থাকি। পোলট্রি খাদ্য ও ঔষধের দাম বাড়ার ফলে বিপাকে পড়ছে খামারিরা। খামারিদের সরকারিভাবে প্রণোদনা ও বাজার তদারকির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।



Source link