প্রতিদিন প্রতিবেলা খাওয়ার পরই হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন, বিশেষত রাতে
সুস্থ থাকতে কে না চায়? এই সুস্থতার জন্য প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করা উচিত। বিশেষত, খাবার খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে আপনি বেশকিছু উপকারিতা পাবেন।
সাধারণত হাঁটাহাঁটি করলে শরীরের প্রতিটি কোষে বিশুদ্ধ রক্ত এবং অক্সিজেন পৌঁছে যায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সহজেই অসুখে পড়ার প্রবণতা কমে। হাঁটার কিছু নির্দিষ্ট সময় আছে, যা কেবল সেই সময়ে করলেই হতে পারবেন সুস্বাস্থ্যর অধিকারী। সেরকমই একটি বিশেষ সময় হচ্ছে খাবার খাওয়ার পর ।
তো, আসুন জেনে নিই, কিভাবে সঠিক পদ্ধতিতে হাঁটাহাঁটি করে শরীরটাকে নীরোগ ও সুস্থ সবল রাখবেন ।
- রাতের খাওয়ার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে হাঁটার মাধ্যমে হাঁটাহাঁটির শুরুটা করতে পারেন । ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে, যাতে আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাসটা হয়ে যায়। আপনার সাফল্য নির্ভর করবে কতোটা নিয়মিত আর কতক্ষণ হাঁটছেন তার উপর ।
- ঠিকঠাক হজম হয়না বলে অনেকে নিয়মিত এ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধও খেয়ে থাকেন। কিন্তু হজম হলো শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে খাদ্য আপনার শরীরে বিভিন্ন ক্রিয়া-বিক্রিয়া করে। তাই খাবারের পর আপনার শরীরে যদি ভারী ভাব অনুভূত হয়, তবে না ঘুমিয়ে আপনার উচিৎ হাঁটার চেষ্টা করা। যা আপনার খাবার হজম করবে এবং বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া করার মতো অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেবে।
- খাবারের পর হাঁটা স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর বলে অনেকের মধ্যেই ভুল ধারণা আছে । কিন্তু খাওয়ার পর অল্প হাঁটা আপনার শরীরের বিপাকীয় ক্রিয়াকে বরং ত্বরান্বিত করে। এটি আপনার শরীরের বাড়তি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলে এবং এর মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতে সাহায্য করে।
- যারা ডায়াবেটিস রোগী, তাদের অবশ্যই হাঁটা উচিৎ। খাবারের পর দশ থেকে ত্রিশ বা আধা ঘণ্টা হাঁটলে রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যাদের ডায়াবেটিস নেই, তারা ও হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে নিজেকে রাখতে পারবেন ফিট।
- যারা নিজের ওজন নিয়ে অনেক বেশী চিন্তিত, তাদের জন্য ভালো খবর হল, হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে আপনি বাড়তি ওজন খুব সহজেই কমাতে পারবেন। ওজন কমাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে হাঁটা। আমরা জানি, সারাদিনের কর্ম ব্যস্ততায় এবং মানসিক চাপে শরীরচর্চা করার তেমন সময় পাওয়া যায় না । সেইক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটি আপনাকে দারুণ কাজ দেবে ।
- ব্যক্তিগত জীবনের নানা ঝামেলা আর কর্মক্ষেত্রের কাজের চাপ আমাদের নিশ্চিন্তে ঘুমাতে দেয় না।তবে, ঘুম না আসার সমাধানটা খুব কঠিন কিছু নয়, আপনি যদি রাতের খাবারের পর কিছুক্ষণ হাঁটেন তবে এটি আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে যা মানসিক চাপ কমায় আর আপনার ঘুম আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি হবে।
- নিয়মিত সকালবেলা হাঁটলে রক্তের লোহিত কণিকাগুলো থেকে চর্বি ঝরে যায়, হাঁটার সময় রক্তের ইনসুলিন ও গ্লুকোজ ক্ষয় হয়। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে। সকালে হাঁটলে বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে হৃৎপিন্ড রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত মস্তিষ্কে সরবরাহ করে। ফলে মস্তিষ্ক সচল থাকে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
- হাঁটলে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হয়। এতে ত্বকের লোমকূপগুলো খুলে যায় এবং শরীরের দূষিত পদার্থগুলো ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। ফলে ত্বক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময় দেখায়।
অতএব , যতোটুকু সম্ভব চেষ্টা করতে হবে হাঁটার জন্য । নিয়মিত হাঁটুন আর ওষুধের উপর চাপ কমান ।